সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:০৮ পূর্বাহ্ন
বিশেষ প্রতিবেদক: দেশব্যাপী করোনাভাইরাসের গণ টিকাদানের দ্বিতীয় দিন পর্যন্ত টিকাগ্রহণের জন্য কক্সবাজারে নিবন্ধন করেছেন ৯ হাজার ৫৩৩ জন; এদের মধ্যে গত দুই দিনে টিকাগ্রহণ করেছেন ৭১৭ জন।
সোমবার সন্ধ্যায় এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন কক্সবাজারের সিভিল সার্জন ডা. মো. মাহবুবুর রহমান।
গত দুই দিনে টিকাগ্রহণকারি ৭১৭ জনের মধ্যে রোববার প্রথমদিন ৩৮৭ জনএবং সোমবার দ্বিতীয়দিনে ৩৩০ জন টিকা নিয়েছেন। টিকাগ্রহণকারিদের মধ্যে ৬০২ জন পুরুষ এবং ১১৫ জন নারী।
সিভিল সার্জন ডা. মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, সারাদেশের মত রোববার কক্সবাজারে করোনাভাইরাসের গণ টিকাদান কর্মসূচী শুরু হয়েছে। টিকাগ্রহণে মানুষের মাঝে আশাব্যঞ্জক সাড়া পাওয়া যাচ্ছে।
“ সোমবার বিকাল ৫ টা পর্যন্ত কক্সবাজার জেলায় টিকাগ্রহণের জন্য নাম নিবন্ধন করেছেন মোট ৯ হাজার ৫৩৩ জন ব্যক্তি। এদের মধ্যে প্রথমদিন রোববার টিকাগ্রহণ করেছেন ৩৮৭ জন এবং দ্বিতীয়দিন সোমবার ৩৩০ জন। ”
সিভিল সার্জন বলেন, “ প্রথম দফায় কক্সবাজার জেলার জন্য করোনাভাইরাসের টিকা এসেছে ৮৪ হাজার ডোজ। প্রতিজন ব্যক্তিকে ২ ডোজ করে টিকা প্রদান করা হবে। সেই হিসেবে ৪২ হাজার জনকে টিকাদান করা সম্ভব হবে। ”
মাহবুবুর রহমান জানান, প্রথম দফায় আসা ৮৪ হাজার ডোজ টিকাদান সম্পন্ন হওয়ার পর জনসংখ্যার নিমিত্তে চাহিদাপত্র তৈরী করে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে অবহিত করা হবে। জেলার সব বাসিন্দাকে টিকাদানের আওতায় আনা হবে।
রোববার একযোগে সারাদেশের মত কক্সবাজার জেলায়ও করোনাভাইরাসের টিকাদান কর্মসূচীর উদ্বোধন হয়। এই দিন প্রথম টিকাগ্রহণ করেছেন কক্সবাজার জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোস্তাক আহমদ চৌধুরী। এরপর কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশীদ, সংরক্ষিত নারী সংসদ সদস্য কানিজ ফাতেমা মোস্তাক, সিভিল সার্জন ডা. মো. মাহবুবুর রহমান, কক্সবাজার প্রেসক্লাবের সভাপতি আপবু তাহের ও বাংলাদেশ মেডিকেল এসাসিয়েশন (বিএমএ) কক্সবাজার জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক ডা. মাহাবুবুর রহমান সহ আরো কিছু বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ। প্রথমদিনে টিকাগ্রহণ করেছেন ৩৮৭ জন।
দ্বিতীয়দিন সোমবার টিকাগ্রহণ করেছেন কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মো. হাসানুজ্জামান ও জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট শামীম আরা স্বপ্না সহ আরো বেশ কয়েকজন বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ। এ দিন টিকাগ্রহণ করেছেন ৩৩০ জন।
উল্লেখ্য, গত ৩১ জানুয়ারী ৮৪ হাজার ডোজ করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন কক্সবাজারে আনা হয়। বেক্সিমকো ফার্মার একটি ফ্রিজার কাভার্ডভ্যান যোগে এসব টিকা আনা হয়েছে। কক্সবাজার সিভিল সার্জন অফিসের ইপিআই স্টোরে টিকাগুলো রাখা হয়েছে।
ভ্যাকসিনগুলো ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটে উৎপাদিত অক্সফোর্ড অ্যাস্ট্রাজেনের ‘কোভিশিল্ড’ টিকা। এসব করোনা ভ্যাকসিনের নিরাপত্তার জন্য সিভিল সার্জন অফিসে পুলিশও মোতায়েন করা হয়েছে।
কক্সবাজারে আনা ৮৪ হাজার করোনাভাইরাসের টিকার মধ্যে ৮ হাজার ৪০০ টি ভায়াল রয়েছে। প্রতিটি কার্টনে ১ হাজার ২০০ টি ভায়াল রয়েছে। প্রতিটি ভায়ালে রয়েছে ১০ ডোজ টিকা। একজন ব্যক্তি ২ ডোজ করে করোনাভাইরাসের নিতে হবে। সেই হিসেবে জেলায় ৪২ হাজার মানুষ টিকা নিতে পারবে। কোন ব্যক্তি প্রথম ডোজ টিকাগ্রহণের ৮ সপ্তাহ পর দ্বিতীয় ডোজ টিকা গ্রহণ করতে পারবেন।
সরকারের নীতিমালা অনুযায়ী ১৫ ক্যাটাগরির নাগরিকগণ অগ্রাধিকার ভিত্তিতে করোনাভাইরাসের টিকা দেওয়া হবে।
এসব ক্যাটাগরিভুক্ত ব্যক্তি ও পেশা হল, সকল সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্স, ওয়ার্ডবয়, স্বাস্থ্যকর্মি, স্বাস্থ্য ও পরিবার-পরিকল্পনা বিষয়ক সকল কর্মকর্তা-কর্মচারী, স্বাস্থ্য বিভাগীয় সকল কর্মকর্তা-কর্মচারী, মেডিকেল কলেজের সকল শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারী, সেনাবাহিনীসহ প্রতিরক্ষা বাহিনীর সকল সদস্য, বিজিবি, পুলিশ, মুক্তিযোদ্ধা, বীরাঙ্গনা, গণমাধ্যমকর্মি, ব্যাংক কর্মকর্তা-কর্মচারী, করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে নিয়োুিজত স্বেচ্ছাসেবক, রাষ্ট্র পরিচালনার নিমিত্তে অপরিহার্য সরকারি অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারী, মন্ত্রণালয়, বিভাগ জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে সেবাদানকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী, অনুমোদিত বেসরকারি হাসপাতাল ও স্বাস্থ্য সম্পর্কিত প্রতিষ্ঠানের চিকিৎসক, নার্স, ওয়ার্ডবয়, স্বাস্থ্যকর্মি, করোনার সম্মুখযোদ্ধাসহ আরো কিছু প্রতিষ্ঠানে নিয়োজিত স্টাফ ও ব্যক্তিবর্গ প্রমুখ।
.coxsbazartimes.com
Leave a Reply